Customer Support -  Call / WhatsApp 9830324773, 8777074851 Email - [email protected]
, ,

Nihsanga Maharaj

450.00

নিঃসঙ্গ মহারাজ
উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়

Availability: In stock

প্রচণ্ড অভিমান নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে এল নন্দকুমার। শুধু অভিমান নয়, ক্ষোভ, দুঃখ আর একরাশ অসম্মানের বোঝা মাথায় করে যখন ভদ্রপুর ফিরল তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। মন্দিরে মন্দিরে চলছে সন্ধ্যারতি আর শঙ্খধ্বনি। দূর থেকে তার আওয়াজ ভেসে আসছে। পেঁটরা হাতে বাড়ির উঠোনে পা রাখতেই দেখল ক্ষেমঙ্করী তুলসিতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বেলে প্রণাম করছে। না দেখার ভান করে এগিয়ে যাচ্ছিল নন্দকুমার কিন্তু ক্ষেমঙ্করীর চোখ এড়াতে পারল না। কাছে এসে প্রণাম সেরে ঘোমটাটা ঈষৎ টেনে নিয়ে বলল, ‘ওখানে কোনো অসুবিধা হয়নি তো?”
নন্দকুমার কোনও উত্তর না দিয়ে হাতের পেঁটরাটা নিচে নামিয়ে রাখল। ওকে বিষণ্ণ মুখে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ক্ষেমঙ্করী উদ্বেগের সঙ্গে প্রশ্ন করল, ‘কী ব্যাপার বলতো? তোমার মুখ এমন শুকনো কেন?”
এবার ম্লান হেসে নন্দকুমার বলল, ‘না, কিছু হয়নি।’
“কিছু হয়নি বললেই হবে! মুখখানা ভার! নিশ্চয় চাকরি হয়নি।’
মাথা নিচু করে ক্ষেমঙ্করীকে সমর্থন করল নন্দকুমার।
‘কিন্তু কেন?’ ক্ষেমঙ্করী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে নন্দকুমারের দিকে।
“সেটা তো বলতে পারব না। হয়তো ওই কাজের যোগ্য ব্যক্তি আমি নই। হয়তো বা আমার চেয়ে আরও।’
কথা শেষ হওয়ার আগেই ক্ষেমঙ্করী ফোঁস করে উঠল, ‘তোমার কাজ না দেখে এতবড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল ওরা! আর তুমিই বা কেমন মানুষ! কিছু না বলে সব কিছু সহ্য করে চলে এলে?”
ক্ষেমঙ্করীর কথায় এবার মৃদু হাসল নন্দকুমার। মনে মনে ভাবল সহ্য করা ছাড়া আর তো কোনও উপায় তো ছিল না তার। সে কিইবা করবে! কী করার আছে! সেদিন যেভাবে অপমানিত হতে হয়েছে— যেন ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দিয়েছে। কাজে না করলেও হাবভাব তো এমনটাই ছিল। প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছে এই কাজের যোগ্য তুমি নও। রাস্তা দেখ।
সেদিন সবচেয়ে বেশি অপমানিত হয়েছে রাজবল্লভের কাছে। বন্ধুর জন্য এটুকু উপকার করতে পারতেন। রামগোপালের কথা ঠিক। বড় ছেলেকে সে নাওয়ার- এর অধ্যক্ষ পদে ঢুকিয়ে নিজে ঢাকার দেওয়ান হবে এই তাঁর অভিপ্রায়। সেতো খুব ভাল কথা, সেটা পরিষ্কার করে বললেই পারত। তার জন্যে ইনিয়ে বিনিয়ে কতকগুলো কথা বলতে হল কেন? ছিঃ! ছিঃ! নিজের স্বার্থের জন্য মানুষ কি না করতে পারে!
ইতিহাসের বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে মহারাজ নন্দকুমারকে নিয়ে রচিত উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের এই উপন্যাস ইতিহাসেরই এক উজ্জ্বল উদ্ধার।
সমকাল প্রতারণার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ভাগ্যহত মানুষ হিসেবে নন্দকুমারকে মনে রেখেছে। যা সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার নন্দকুমারই প্রথম স্বদেশী শহীদ।
গভীরভাবে দেখলে তার মতো দেশপ্রেমিক, সুদক্ষ রাজকর্মচারী, প্রজাকল্যাণকামী, রাজস্ব সচিব ও বিবেকবান মানুষ চিরকাল দুর্লভ। সমস্যাসঙ্কুল জীবনে বারবার ভাগ্যবিড়ম্বিত হওয়া সত্ত্বেও নিঃসঙ্গ ভাবে সংগ্রাম করে গেছেন মহারাজ নন্দকুমার।
লেখক একান্তভাবে তথ্যনিষ্ঠ ও ইতিহাস নির্ভর থেকে বিস্মৃতির ইতিহাসের ধুলো ঝেড়ে ভাগ্যহত নিঃসঙ্গ নন্দকুমারকে তুলে এনেছেন এই উপন্যাসে। উপন্যাসটি সাধারণ পাঠকের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের ছাত্র ও গবেষকদের কাছেও কৌতূহলের বিষয় হয়ে উঠবে বলে ধারণা ।
Author

Cover

Language

Publisher

You may also like…

    0
    Your Cart
    Your cart is emptyReturn to Shop